স্ট্যাচু অফ পোভার্টি •|• Statue of Poverty

Under Construction

ভিপিডি (VPD) কি এবং কিভাবে ইউনি-এসিস্টের মাধ্যমে ভিপিডি করাবেন! - সমস্যার সমাধান

কিছু জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় যেমন- TU München, TU Ingolstadt ইত্যাদিতে আবেদন করার জন্য ভিপিডি জমা দিতে হয়। তো এই ভিপিডি (VPD) আসলে কি এবং কি...

Search This Blog

Blog Archive

Mail Instagram Pinterest RSS
Poverty Menu

পোভার্টি টেলস | স্বপ্নযাত্রা (দ্বিতীয় কিস্তি)

... প্রথম অফার লেটার পেতে না পেতেই পুরো ফ্যামিলি নিয়ে ভয়াবহ ভাইরাস জ্বরে পড়লাম। ঘরের যত কম্বল আছে সবকিছু জড়িয়ে নিজেকে মমি বানিয়ে রাখলাম। ভিসা ও এম্ব্যাসির প্রসিডিউর নিয়ে খুব ভাল নলেজ ছিল না, মাগদেবুর্গের ঐ কোর্সটা আমার প্রথম পছন্দ ছিল না। তাই দশদিন পর, সুস্থ হয়ে বুঝতে পারছিলাম না কবে এম্ব্যাসির এপয়েন্টমেন্ট নেয়া ঠিক হবে, কারণ অন্য ভার্সিটগুলো এখনো তাদের ডিসিশন জানায়নি। টিইউ কেমনিটৎস থেকে ত সরাসরি বলাই ছিল, স্টেটাস জানার জন্য কোন ইমেইল পাঠানো যাবে না। বাকি ভার্সিটিগুলোতে ইমেইল করেও কিছু জানা গেল না। এর মধ্যে হঠাৎ বিসাগের গ্রুপে পোস্ট পড়া শুরু হল যে এম্ব্যাসির সব এপয়েন্টমেন্টগুলো মার্চ পর্যন্ত ফুল-বুকড!

দুইদিন আগেও আমি জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত স্লট খালি দেখেছি। কিভাবে একদিনের মধ্যে সব বুকড হয়ে যায়! বাংলাদেশের কয় হাজার স্টুডেন্ট জার্মানির অফার লেটার পায়! - মাথায় ছোটখাট আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। এডমিশন পেয়েও কি তাহলে যেতে পারব না!

জার্মান এম্বাসির ভিসা এপোয়েন্টমেন্ট বুকিং সিস্টেমটা দুইন্যার সবচে ফালতু সিস্টেম। এপোয়েন্টমেন্ট নিতে অফার লেটার-মেটার কিচ্ছু লাগেনা, শুধু একটা পাসপোর্ট নম্বর আর ইমেইল এড্রেস থাকলেই হয়। এর সুযোগ নিয়ে এজেন্সিগুলা গণহারে স্লট বুক করে রাখসে বলে সন্দেহ হল! গ্রুপে পোস্ট করে জানা গেল শেষমেশ অফার লেটার না পেলে অনেকেই নিশ্চয় মানবিক কারণে বুকিং ক্যান্সেল করে দিবে অথবা এম্ব্যাসি আরও স্লট বাড়াবে। তাদের কথা মত, সারাদিন এম্ব্যাসির ওয়েবসাইটে সময়-ক্ষেপণ করতে লাগলাম। কয়েকদিন পর, হঠাৎ করে হঠাৎ করে এপ্রিল মাসের স্লট ছাড়া হল। চোখের পলকে সব বুক হয়ে গেল, ডেট পেলাম না। এভাবে কিছু দিন চলার পর মার্চের ১৪ তারিখে একটা স্লট নিতে পারলাম। আবার একদিন ফেব্রুয়ারি মাসের একটা ডেট চোখে পড়তে আগেরটা ক্যান্সেল করে নতুন না নিতে গিয়ে দুইটাই হারালাম। মার্চের ২৩ তারিখ খালি ছিল, সেটা বুক করে এম্ব্যাসির কন্টাক্ট ফর্ম পূরণ করে খুব সুন্দরভাবে তাদেরকে ফেব্রুয়ারির ১০ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে একটা ডেট দিতে ইমেইলে অনুরোধ করলাম। তিন-চারদিন পর এম্ব্যাসি আমাকে ১৪ ফেব্রুয়ারির ডেট দিল এবং বুঝলাম এটাই ট্রু লাভ!

এসব নাটকীয়তার মধ্যে আরও তিনটা কোর্সের অফার লেটার পেলাম, সাথে বাকিগুলা থেকে নিয়মিত বিরতিতে প্রত্যাখ্যানপত্র পাচ্ছি। সব মিলিয়ে টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি কেমনিৎসে যাব বলে মনস্থির করলাম। কোর্সটা ভাল, আমার পছন্দের, প্রফেসর ও অন্য অফিসিয়ালরাও অনেক আন্তরিক। তারপর ভিসা ইন্টার্ভিউর প্রস্তুতি হিসেবে,

- এম্ব্যাসির দেয়া চেকলিস্ট ফলো করে সব ডকুমেন্টস রেডি করলাম।
- স্টুডিওতে গিয়ে ভদ্রমার্কা ছবি তুলে নিলাম।
- ডয়চে ব্যাঙ্কে ব্লক একাউন্ট করে নিলাম।
- গ্রিন ডেল্টায় ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স করে নিলাম।
- ঢাকা ব্যাঙ্কে স্টুডেন্ট প্রোফাইল খুলে  ব্লকে টাকা সেন্ড করলাম।
- স্টুডেন্টেনভের্কের মাধ্যমে ডর্মে রুমের জন্য আবেদন করলাম।
- বুকিং ডট কমে গিয়ে ১০ দিনের জন্য ফ্রি ক্যান্সেলের হোটেল-রুম বুক দিলাম।
- ভিসা এপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করলাম।
- মাস্টার্সের কোর্সটা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলাম, শহর সম্বন্ধে ধারণা নিলাম।
- নিয়মতভাবে ব্যাচেলরের পড়াশুনা একটু রিভাইস দিয়ে নিলাম।

প্রত্যেকটি ধাপে বিসাগে প্রশ্ন করেছি, সাহায্য নিয়েছি এবং ঠিক সময়েই শেষ করেছি। শুধু ব্লকে টাকা ট্রান্সফারের কনফার্মেশন পেতে দেরি হয়েছিল, যেটা ইন্টার্ভিউর ৩ দিন পর মিসিং ডকুমেন্ট হিসেবে জমা দিয়েছি! 

(চলবে)

পোভার্টি টেলস | স্বপ্নযাত্রা (প্রথম কিস্তি)